রোববার কলম্বোর র্যান্ডল প্রেমাদাস স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় ওয়ানডে ম্যাচে বাংলাদেশ ১৬ রানে জয় পেয়ে সিরিজে লড়ার আদর্শ ম্যাচ উপহার দিল। প্রথম ম্যাচে ৭৭ রানে হারের প্রতিকূলতা কাটিয়ে উঠে তরুণ স্পিনার তানভীর ইসলাম তাঁর চমৎকার প্রথম ফিফার (৫ উইকেট) তুলে এনে বাংলাদেশের জন্য ‘অদম্য প্রত্যাবর্তন’ নিশ্চিত করেন।
🔹 বাংলাদেশ ইনিংস: পরিকল্পনা ও সংগ্রাম
বাংলাদেশের ইনিংস শুরু হয় টস জিতে ব্যাট করে। পুরো দল ২৪৮ রানে অল-আউট হয় ৪৫.৫ ওভারে।
- পারভেজ হোসাইন: ৬৭ (৬৯ বল)
- তৌহিদ হৃদয়: ৫১ (৬৯ বল)
- তানজিম হাসান শাকিব: ২১ বলে ঝকঝকে ৩৩ রান (২ চার, ২ ছয়)
এই ইনিংস ছিল প্রতিদিনের প্রতিদ্বন্দ্বিতার মধ্যে দাঁড়িয়ে একটি প্রতিযোগিতামূলক স্কোর।
🔹 তানভীর ইসলামের বদলানো খেলা
তানভীর ইসলাম করে দেখান কিভাবে একটি স্পিনার দলের নির্ধারণী ভূমিকা নিতে পারে। তিনি খেলেন ১০ ওভারে ৩৯ রান দিয়ে ৫ উইকেট (5/39)।
তার শিকার:
- কুশল মেন্ডিস
- কামিন্দু মেন্ডিস
- দিনিথ ওয়েললালাগে
- মাহীশ থিকশানা
প্রথম ফিফা উইকেট, ইকোনমি ও নিয়ন্ত্রিত লাইন-লেন্থে বল করে আত্মবিশ্বাসের ভিত গড়ে তোলেন।
🔹 লঙ্কান ইনিংস: মুষ্টিমেয় প্রতিরোধ
শ্রীলঙ্কা ২৪৮ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ২৩২ রানে অলআউট হয়ে যায় ৪৮.৫ ওভারে।
- ১ জন ব্যাটার করেন: ৭৮ (৮৫ বল)
- অন্যজন করেন: ৫৬ (৩১ বল)
৩০ ওভার শেষে স্কোর ছিল ১৩২/৬ — যা ফাইটিং অবস্থার আভাস দিলেও শেষ পর্যন্ত জয় রক্ষা করতে পারেনি।
🔹 খেলার টার্নিং পয়েন্ট
- স্পিন অ্যাটাক: তানভীরের পরপর দুই উইকেটে ব্যাটিং লাইন ভেঙে পড়ে।
- মিডল-অর্ডারে সংগ্রাম: লঙ্কানদের একক লড়াই কাজে আসেনি।
- শেষ ওভার পরিকল্পনা: মোস্তাফিজের চাপ সৃষ্টি এবং তানভীরের নির্ভুল স্পেল জয় নিশ্চিত করে।
🔹 সিরিজ এখন ১–১: ফাইনালের অপেক্ষা
এই জয়ের ফলে সিরিজে সমতা ফিরে এসেছে – এখন ১–১।
টাইগারদের পরবর্তী লক্ষ্য ৮ জুলাই পাল্লেকেলায় তৃতীয় ওডিআইয়ে চূড়ান্ত লড়াই।
🔹 বিশ্লেষণ: কী শিক্ষা পেল বাংলাদেশ
- স্পিনের আধিপত্য: কম রানের লক্ষ্যেও স্পিন বিভাগ ম্যাচ জেতাতে পারে।
- ব্যালান্সড ইনিংস: ওপেনিং ও মিডল অর্ডারে মিলে গড়া রানই ম্যাচের ভিত রচনা করে।
- টিম পরিকল্পনা: স্পিন নিয়ে অধিনায়ক-টিম ম্যানেজমেন্টের পরিকল্পনা কার্যকর ছিল।
🔚 উপসংহার
তানভীর ইসলামের নির্ভুল স্পেল—১০ ওভারে ৩৯ রান দিয়ে ৫ উইকেট—বাংলাদেশের জন্য এক অনন্য প্রত্যাবর্তনের গল্প।
প্রথম ম্যাচের হারের হতাশা থেকে শিক্ষা নিয়ে দ্বিতীয় ম্যাচে দলের শক্তি, কৌশল এবং আত্মবিশ্বাস মিলিয়ে জয় নিশ্চিত করে টাইগাররা।
৮ জুলাই পাল্লেকেলায় হতে যাচ্ছে সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচ—সেই ম্যাচেই বোঝা যাবে, বাংলাদেশ এই জয়ের ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে পারে কিনা।