জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দীন ও প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের মধ্যে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত বৈঠকের বিষয় বিস্তারিতভাবে প্রকাশ না হওয়ায় তা জনগণের সামনে স্পষ্ট করার দাবি জানিয়েছেন।
শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর গুলশানে নিজ বাসভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, “গত বৃহস্পতিবার রাতের সাক্ষাৎ ‘ওয়ান টু ওয়ান’ ছিল। তবে সেখানে কী আলোচনা হয়েছে—তা আমাদের জানা যায়নি। আমরা মনে করি, ভেতরের ব্যাপার গোপন থাকলে দেশের গণতন্ত্রের স্বার্থ ক্ষুণ্ণ হতে পারে।”
বিএনপির ধারণা অনুযায়ী, ওই বৈঠকে জাতীয় নির্বাচন সংক্রান্ত প্রস্তুতি ও সময়সূচি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। সালাহউদ্দিন বলেন, “ফেব্রুয়ারি-এ যে নির্বাচন হবে—সেটা নিয়ে হয়ত ম্যাসেজ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা, কিন্তু এখন পর্যন্ত তা জনগণের কাছে স্পষ্ট নয়।”
বাংলাদেশ বিএনপির মুখপাত্র আরও বলেন, “বর্তমান পরিস্থিতিতে স্থানীয় সরকার নির্বাচন আয়োজনের সুযোগ নেই। জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি সেপ্টেম্বরের মধ্যে সম্পন্ন হওয়া উচিত বলে আমাদের বিশ্বাস।”
তিনি উল্লেখ করেন, “প্রায় সব রাজনৈতিক দল জাতীয় নির্বাচন চায়, স্থানীয় নির্বাচন নয়। ইসির প্রধান অগ্রাধিকার হওয়া উচিত আরও সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ জাতীয় নির্বাচন আয়োজন করা।”
🔍 বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট
২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পর বর্তমান বিজিএস সরকারের পতনের পরিযোগে সংলগ্ন সময় থেকে নির্বাচন আয়োজন এবং রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা নিয়ে আলোচনা চলছে। বিএনপি ও অন্যান্য বিরোধী দল কমিশনের সাথে একাধিক দফা বৈঠক করেছে। তবে জাতীয় নির্বাচন সংক্রান্ত কোন স্থির দিন ঘোষণা না হওয়ায় বিরোধী মহলে উদ্বেগ বিরাজ করছে 1।
সালাহউদ্দিন বলেন, “এনসিপি ও বিএনপি যেহেতু জাতীয় নির্বাচন চায়, তাই এই একান্ত বৈঠকের বিষয় বিস্তারিত জানা মানুষের অধিকার। বিশেষ করে নির্বাচনের সময়সূচি ও প্রস্তুতি নিয়ে সরকারের প্রতিশ্রুতি ও পরিকল্পনা জনগণের সামনে তুলে ধরা জরুরি।”
📌 বিএনপির দাবি এবং পরবর্তী পদক্ষেপ
- বলা হয়েছে, প্রধান উপদেষ্টা ও সিইসির বৈঠকে নির্বাচন কমিশনের সকল প্রস্তুতির সময়রূপচিত্র ‘roadmap’ স্পষ্টভাবে তুলে ধরতে হবে।
- আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যেই জাতীয় নির্বাচনের সম্ভাব্য তারিখ ঘোষণা চাওয়া হয়েছে।
- এই বৈঠক তথ্য গোপনীয় হিসেবে রাখা হলে রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব ও অবিশ্বাস তৈরির আশঙ্কা রয়েছে বলে সরকারকে সতর্ক করা হয়েছে।
জাতীয় নির্বাচনের নিরপেক্ষতা ও প্রস্তুতির স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে বিএনপি বিশাল আন্দোলন গড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে বলেও দলের সূত্রে জানা গেছে। এরই অংশ হিসেবে তারা মিডিয়া ও সামাজিক মাধ্যমে একাধিক বার্তা প্রকাশ করবে।
অন্যদিকে, নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে—**সিইসি এ এম এম নাসির উদ্দীন** এই বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টার সাথে গণতান্ত্রিক সংস্কার, নির্বাচন সংশোধন এবং কমিশনের ক্ষমতা ও দায়িত্ব নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন 2। তবে বৈঠক শেষে কোন বিবৃতিতে তা নিশ্চিত হয়নি।
⚖️ বিশ্লেষকদের মন্তব্য
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, নির্বাচন সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা ও সময়সূচি ছবি(Project) সঠিকভাবে জনগণের সামনে না তুলে দিলে রাজনৈতিক উত্তেজনা বাড়বে ও জনগণের মনোবল ক্ষুণ্ণ হবে। তাদের বক্তব্য অনুযায়ী, "স্বচ্ছতা ও সময়োপযোগী তথ্য ছাড়া গণতন্ত্র সংগ্রামের আত্মার ক্ষতি হতে পারে"।
বর্তমানে নির্বাচন নিয়ে জন্ম নেওয়া অনিশ্চয়তা কমানো, ভবিষ্যতে রাজনৈতিক উত্তাপ ও সামাজিক অস্থিরতা এড়ানোর জন্য এই বৈঠকের বিষয় জনগণের সামনে আনতে হবে—এটাই বিএনপি নেতাদের মূল দাবির সারমর্ম।
Tags: নির্বাচন কমিশন, প্রধান উপদেষ্টা, মোট ভোট, জাতীয় নির্বাচন, নির্বাচন সময়সূচি, সিইসি, কমিশন বৈঠক বিষয়, বিএনপি দাবি, রাজনৈতিক স্বচ্ছতা, interim government election