চীনের উন্নতমানের J-10C যুদ্ধবিমান ইরানের হাতে আসার খবর আন্তর্জাতিক মহলে উত্তেজনার জন্ম দিয়েছে। যদিও এখনো আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসেনি, তবুও বিভিন্ন গোয়েন্দা প্রতিবেদন ও উপগ্রহ চিত্রে এই লেনদেনের ইঙ্গিত মিলেছে। প্রশ্ন উঠছে—এই ঘটনা কি মধ্যপ্রাচ্যের সামরিক পরিস্থিতিকে আমূল বদলে দেবে?
বিশ্লেষকদের মতে, ইরান ও চীনের মধ্যকার এই প্রতিরক্ষা সহযোগিতা দুই দেশের কৌশলগত অংশীদারিত্বকে এক নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাচ্ছে। বিশেষত সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দুই দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক ও সামরিক সম্পর্ক যে ঘনিষ্ঠ হয়েছে, তা এই চুক্তির মাধ্যমেই আরও স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।
চীনের Chengdu Aircraft Industry Group দ্বারা নির্মিত J-10C যুদ্ধবিমানটি আধুনিক প্রযুক্তিতে সমৃদ্ধ। এতে রয়েছে AESA রাডার, উন্নত অ্যাভিওনিক্স এবং দৃষ্টিসীমার বাইরেও আঘাত হানার ক্ষমতা (BVR)।
সঙ্গে থাকছে PL-15 এবং PL-10 মিসাইল, যা এই জেটকে আধুনিক আকাশযুদ্ধে ভয়ংকর এক শক্তিতে পরিণত করে।
ইরানের বর্তমান বিমানবহর তুলনামূলকভাবে পুরনো এবং প্রযুক্তিগতভাবে পিছিয়ে আছে। F-14 Tomcat কিংবা Mig-29-এর মতো যুদ্ধবিমানগুলো দীর্ঘদিন ধরে ব্যবহৃত হলেও আধুনিক যুদ্ধ পরিস্থিতিতে এগুলোর কার্যকারিতা সীমিত।
এই প্রেক্ষাপটে J-10C যুদ্ধবিমান যুক্ত হওয়া ইরানের জন্য একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ হতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই চুক্তি বাস্তবায়িত হলে ইরান আকাশ প্রতিরক্ষা এবং আক্রমণ সক্ষমতায় উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করবে, যা মধ্যপ্রাচ্যের শক্তির ভারসাম্যে বড়সড় পরিবর্তন আনতে পারে।
ইসরায়েল ইতোমধ্যে এই খবরকে কেন্দ্র করে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এবং যুক্তরাষ্ট্রও বিষয়টি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে।
অনেকে মনে করেন, এই উদ্যোগ শুধু সামরিক নয়, বরং চীনের ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ’-এর অংশ হিসেবেও এটি গুরুত্বপূর্ণ।
চীন ও ইরানের মধ্যে ২৫ বছরের কৌশলগত চুক্তির আওতায় জ্বালানি, বাণিজ্য এবং প্রতিরক্ষা—এই তিন ক্ষেত্রেই ঘনিষ্ঠতা বাড়ছে।
যদি চীন সত্যিই এই যুদ্ধবিমান ইরানের হাতে তুলে দেয়, তাহলে তা শুধু একটি সামরিক লেনদেনই নয়, বরং গোটা অঞ্চলের নিরাপত্তা পরিস্থিতিকে নতুন করে ভাবতে বাধ্য করবে বিশ্বশক্তিগুলোকে।