সাম্প্রতিক সময়ে ইরানে স্টারলিংক স্যাটেলাইট ইন্টারনেট ব্যবহারের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার খবর সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে।
বিভিন্ন প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, ইরান সরকার স্টারলিংক ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইন প্রয়োগের পরিকল্পনা করছে — যার মধ্যে মৃত্যুদণ্ডের মতো শাস্তিও অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে।
"কিন্তু এই খবরের বাস্তবতা কতটুকু?"
আসুন বিস্তারিত জানি। স্টারলিংক হলো স্পেসএক্স কোম্পানির একটি স্যাটেলাইট ইন্টারনেট প্রকল্প, যা বিশ্বব্যাপী উচ্চগতির ইন্টারনেট সেবা দিতে সক্ষম। এটি বিশেষভাবে দূরদূরবর্তী অঞ্চলগুলোতে ইন্টারনেট সংযোগ বাড়ানোর জন্য ডিজাইন করা হয়েছে।
ইরান সরকার দীর্ঘদিন ধরে কঠোর সাইবার নিরাপত্তা এবং ইন্টারনেট নিয়ন্ত্রণ নীতিমালা অনুসরণ করে আসছে। তারা প্রায়ই আন্তর্জাতিক ইন্টারনেট সেবা ব্যবহারে বিধিনিষেধ আরোপ করে, বিশেষত যখন এটি রাষ্ট্রের নীতিমালার সঙ্গে সাংঘর্ষিক হয়।
যেসব প্রযুক্তি সরকারের নজরদারি বা নিয়ন্ত্রণ থেকে মুক্ত, সেগুলো নিয়ে ইরান সবসময় সতর্ক। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদ ও সোশ্যাল মিডিয়ায় যে সব খবর দেখা যাচ্ছে, সে গুলোতে বলা হয়েছে, ইরানি কর্তৃপক্ষ স্টারলিংক ব্যবহারকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে পারে কারণ এটি সরকারের নিয়ন্ত্রণের বাইরে স্যাটেলাইটের মাধ্যমে সরাসরি ইন্টারনেট সংযোগ দেয়। এর ফলে ইরানের সেন্সরশিপ এবং তথ্য নিয়ন্ত্রণ ভেঙে পড়তে পারে।
তবে, সরকারিভাবে কোনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি বা আইনগত নথি প্রকাশিত হয়নি যা স্পষ্টভাবে মৃত্যুদণ্ডের কথা উল্লেখ করে। অনেক সংবাদ উৎস এবং বিশ্লেষকরা মনে করেন, ভাইরাল খবরটি বেশিরভাগই গুজব বা অতিরঞ্জিত তথ্য হতে পারে।
বর্তমানে ইরানে স্টারলিংক ব্যবহারে কঠোর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। ২০২২ এবং ২০২৩ সালে ইরানি গণবিক্ষোভ চলাকালে সরকার স্যাটেলাইট ইন্টারনেট পরিষেবা ব্যবহারের বিষয়ে খুব সতর্ক ছিল।
তবে মৃত্যুদণ্ডের শাস্তি প্রযোজ্য হওয়ার তথ্যটি সরকারি পর্যায়ে এখনও নিশ্চিত নয়। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা ইরানের ইন্টারনেট সেন্সরশিপ এবং প্রযুক্তি ব্যবহারের ওপর নজর রাখছে। তারা বারবার সতর্ক করেছে যে ইন্টারনেট ব্যবহারে দমন-পীড়ন এবং অত্যাচার হতে পারে, তবে মৃত্যুদণ্ডের কথা নিশ্চিত করে কেউ জানায়নি।
ইরানে স্টারলিংক ব্যবহারে কঠোর নিষেধাজ্ঞা এবং শাস্তির হুমকি সত্য হলেও, ভাইরাল খবরে যে মৃত্যুদণ্ডের বিষয়টি বলা হচ্ছে, তা এখনও নিশ্চিত নয়। এ ধরনের খবর অনেক সময় ভুল তথ্য বা গুজবের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
যদি আপনি ইরানে থাকেন, তাহলে সরকারি আইন ও নির্দেশিকা মেনে চলা সর্বোত্তম। প্রযুক্তিগত সুবিধার জন্য আইন উপেক্ষা করলে ভয়াবহ শাস্তির সম্মুখীন হতে পারেন। সর্বশেষ তথ্যের জন্য প্রামাণিক সংবাদ ও সরকারি ঘোষণার উপর নজর রাখা জরুরি।