২০২৫ সালের ৫ আগস্ট ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থানে’ সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর, ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকারের গঠনের দিনকে ‘নতুন বাংলাদেশ দিবস’ হিসেবে ঘোষণা করে সরকার। কিন্তু এই সিদ্ধান্তে দ্বিমত জানিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-এর শীর্ষ তিন নেতা— সদস্য সচিব আখতার হোসেন, উত্তরাঞ্চলের সংগঠক সারজিস আলম এবং দক্ষিণাঞ্চলের সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ।
তারা স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন, নতুন বাংলাদেশের সূচনা হয়েছিল ৫ আগস্ট, অন্তর্বর্তী সরকারের গঠনের তারিখ ৮ আগস্ট নয়। এ নিয়ে বৃহস্পতিবার তারা তাদের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে পৃথক পোস্টে নিজেদের মতামত তুলে ধরেন।
আখতার হোসেন বলেছেন, আমরা ‘নতুন বাংলাদেশ দিবস’ শুধুমাত্র তখনই মান্য করব, যদি জুলাই ঘোষণাপত্র প্রকাশিত হয় এবং জুলাই সনদ মৌলিক রাজনৈতিক সংস্কারের ভিত্তিতে স্বাক্ষরিত হয়। তার আগে নয়।
অন্যদিকে সারজিস আলম আরও কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেন, “৮ আগস্ট কোনো দ্বিতীয় স্বাধীনতার সূচনা নয়। বরং ৫ আগস্টের গণঅভ্যুত্থানই দ্বিতীয় মুক্তির পথ দেখিয়েছে। ৮ আগস্ট হচ্ছে রাজনৈতিক আপস, ছাড় আর বিপ্লবকে ধ্বংসের দিন।”
হাসনাত আবদুল্লাহ তার পোস্টে বলেন, “নতুন বাংলাদেশের প্রকৃত জন্ম ৫ আগস্ট। ৫ আগস্টের ছাত্র-জনতার ঐতিহাসিক বিজয়কে সরকার কুক্ষিগত করার চেষ্টা করলে, জনগণ তা মেনে নেবে না।”
এর আগের দিন, সরকারি তথ্য বিবরণীতে ৮ আগস্টকে ‘নতুন বাংলাদেশ দিবস’ হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত জানানো হয় এবং এটিকে জাতীয় দিবসের ‘খ’ শ্রেণিভুক্ত তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
এই সিদ্ধান্তকে জুলাই বিপ্লবের মূল চেতনার বিপরীত বলেই মনে করছেন এনসিপি নেতারা। তাদের মতে, নতুন বাংলাদেশের ভিত্তি হলো জনগণের ইচ্ছা, ছাত্র আন্দোলনের রক্ত, এবং ৫ আগস্টের ঐতিহাসিক পরিবর্তন—not অন্তর্বর্তী প্রশাসনিক রদবদল।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই মতানৈক্য ভবিষ্যতে এনসিপি ও সরকারের মধ্যে নতুন আলোচনার ক্ষেত্র তৈরি করতে পারে। একইসাথে এটি জনগণের মধ্যে নতুন ইতিহাস নিয়ে বিভক্ত মত তৈরি করবে বলেও ধারণা করা হচ্ছে।
Tags: নতুন বাংলাদেশ, জুলাই গণঅভ্যুত্থান, এনসিপি, আখতার হোসেন, সারজিস আলম, হাসনাত আবদুল্লাহ, নতুন বাংলাদেশ দিবস, ৫ আগস্ট, ৮ আগস্ট, অন্তর্বর্তী সরকার, রাজনৈতিক বিবৃতি, বাংলাদেশের রাজনীতি