সম্প্রতি সামাজিক মাধ্যমে একটি খবর ব্যাপকভাবে ভাইরাল হয়েছে—যেখানে দাবি করা হয়েছে, নিউইয়র্ক সিটির সম্ভাব্য প্রথম মুসলিম মেয়র জোহারান (জোহরান) মমদানীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে এ সংক্রান্ত কোনো প্রামাণ্য বা নির্ভরযোগ্য সূত্র এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি।
৩৩ বছর বয়সী মমদানী একজন ডেমোক্র্যাটিক সোশালিস্ট এবং নিউ ইয়র্কে প্রথম মুসলিম মেয়র হওয়ার লক্ষ্য নিয়ে নির্বাচনী মাঠে নেমেছেন। তিনি ডেমোক্র্যাটিক প্রাইমারিতে বিজয়ী হয়ে বর্তমানে মেয়র নির্বাচিত হওয়ার সম্ভাবনার দিকেই এগিয়ে চলেছেন।
কিছু অনলাইন মিডিয়া ও সামাজিক মাধ্যমে তাঁর বিরুদ্ধে ‘গ্রেপ্তার’ সংক্রান্ত দাবি উঠলেও আন্তর্জাতিক কোনো খ্যাতনামা সংবাদমাধ্যম যেমন: Reuters, AP, The Guardian, কিংবা The New York Times—এই দাবি সমর্থন করেনি। ফলে এসব তথ্য প্রমাণবিহীন এবং গুজব বলেই প্রতীয়মান হচ্ছে।
এছাড়া, মমদানী ও তার সমর্থকরা সম্প্রতি রাজনৈতিক আক্রমণের শিকার হচ্ছেন। বিশেষত কনজারভেটিভ ও রিপাবলিকান নেতারা তার নাগরিকত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন এবং বিতর্কিত বক্তৃতার কারণে তাকে ‘উগ্র’ এবং ‘বিপজ্জনক’ হিসেবে চিহ্নিত করার চেষ্টা করছেন। ইসলামোফোবিয়াও এসব আক্রমণের পেছনে একটি বড় কারণ হিসেবে দেখা যাচ্ছে।
---
✅ গ্রেপ্তারের গুজব ও যাচাই করা তথ্য
বিশ্বস্ত ফ্যাক্ট-চেকিং প্ল্যাটফর্ম যেমন UPMD, Enayas সহ বিভিন্ন বিশ্লেষক দল নিশ্চিত করেছে—মমদানীর নামে কোনো গ্রেপ্তারি পরোয়ানা বা ICE অ্যাপ্রেহেনশন নেই। নিউইয়র্ক পুলিশ বা ফেডারেল কোনো সংস্থা থেকেও এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো বিবৃতি প্রকাশ হয়নি।
যদিও কিছু রাজনৈতিক নেতা তাঁর বক্তব্য নিয়ে আপত্তি তুলেছেন—বিশেষ করে “নেতানিয়াহুকে গ্রেপ্তার করব” ধরনের বক্তব্য নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। তবে এটাকে আইনগত গ্রেফতার হিসেবে গণ্য করার কোনো সুযোগ নেই, এটি তাঁর রাজনৈতিক মত প্রকাশের অধিকার।
---
✅ সত্য চিত্র ও উপসংহার
মমদানী গ্রেপ্তার হননি – কোনো পাবলিক রেকর্ড বা সরকারি বিবরণে তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারের প্রমাণ নেই।
মিথ্যা গুজব ছড়ানো হচ্ছে – এই খবরটি একটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত গুজব, যাতে সমাজে বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে।
ধর্মীয় বিদ্বেষ ও রাজনৈতিক আক্রমণ – তাকে ‘চরমপন্থী’ বলে প্রচার করা হচ্ছে ধর্মীয় পরিচয়ের কারণে।
মমদানী বর্তমানে রাজনৈতিক চাপের মধ্যে রয়েছেন। রিপাবলিকান নেতারা তাঁর নাগরিকত্ব ও সমাজসেবামূলক পরিকল্পনা নিয়ে বিতর্ক তৈরি করছেন, যা একধরনের কৌশলগত রাজনৈতিক লড়াই হিসেবেই দেখা হচ্ছে।
---
✅ শেষ কথা
এই ‘গ্রেপ্তার’ সংক্রান্ত খবরটি ভিত্তিহীন এবং সত্যতা নেই বলেই প্রতীয়মান হয়। কোনো সার্টিফায়েড নিউজ সোর্স এ নিয়ে এখনো রিপোর্ট করেনি। বরং, মমদানী বর্তমানে মার্কিন রাজনীতিতে একটি অনন্য ও আলোচিত রাজনৈতিক চরিত্র হিসেবে উঠে এসেছেন।
গুজব রাজনীতিকে উত্তপ্ত করতে পারে, কিন্তু গণতন্ত্রে প্রকৃত তথ্য ও ফ্যাক্ট-চেকিংই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। মমদানী এখনো প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন এবং তার বিরুদ্ধে কোনো আইনগত বাধা নেই। সুতরাং, সত্য জানুন, বিভ্রান্তি এড়িয়ে চলুন।