জুলাই সনদের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা না এলে আগামী ৩ আগস্ট সচিবালয় ঘেরাও কর্মসূচি পালন করা হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে রাজনৈতিক সংগঠন ইনকিলাব মঞ্চ।
মঙ্গলবার (১ জুলাই) রাজধানীর শাহবাগ থেকে যমুনা ভবনের উদ্দেশ্যে সংগঠনটি একটি ‘লং মার্চ’ কর্মসূচি পালন করে। এই কর্মসূচি চলাকালে পুলিশের বাধার মুখে পড়ে তারা কাকরাইল মোড়ে একটি সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করে।
সমাবেশে ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদি বলেন, “জুলাই কোনো একক দলের সম্পত্তি নয়, এটি সাধারণ মানুষের ফ্যাসিবাদবিরোধী চেতনার প্রতীক। সরকার যদি ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে জুলাই সনদের ঘোষণা না দেয়, তাহলে ৩ আগস্ট আমরা কফিন মিছিলসহ সচিবালয় ঘেরাও করবো।”
তিনি আরও বলেন, “এই আন্দোলনে যারা জীবন দিয়েছেন, যারা পঙ্গু হয়েছেন—তাদের রক্তের দায় থেকে সরকার পালাতে পারবে না।”
সংগঠনের পক্ষ থেকে উপস্থাপিত ১৩ দফা দাবি
- ১৯৪৭, ১৯৭১ ও ২০২৪ সালের আন্দোলনে শহীদদের রাষ্ট্রীয়ভাবে শ্রেষ্ঠ সন্তান ঘোষণা করতে হবে।
- অঙ্গহানি হওয়া আন্দোলনকারীদের জন্য আজীবন পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে হবে।
- ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের অবৈধ নির্বাচনের বৈধতা বাতিল করে দায়ী নির্বাচন কমিশনের সদস্যদের বিচার করতে হবে।
- ফ্যাসিবাদের সুবিধাভোগী মন্ত্রী-এমপি ও আমলাদের বিচারের আওতায় এনে তাদের অবৈধ সম্পদ জব্দ করতে হবে।
- ভারতীয় আধিপত্যসহ সকল বিদেশি হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ জাতীয় অবস্থান নিশ্চিত করতে হবে।
- জুলাই, পিলখানা ও শাপলা গণহত্যার দায়ীদের বিচার এবং সংশ্লিষ্ট অপশক্তিকে চিহ্নিত করতে হবে।
- রাষ্ট্র কাঠামোর এমন সংস্কার করতে হবে যাতে ভবিষ্যতে কোনো স্বৈরাচার বা ফ্যাসিবাদ ফিরে না আসতে পারে।
- ৩৬ জুলাইকে জাতীয় মুক্তি দিবস হিসেবে ঘোষণা দিতে হবে।
- জুলাই সনদের ভিত্তিতে একটি বৈষম্যহীন ইনসাফভিত্তিক কল্যাণ রাষ্ট্র গঠনের রূপরেখা তৈরি করতে হবে।
- সংবিধান থেকে জনবিরোধী ধারাগুলো বাতিল করে জুলাই সনদকে তফসিলে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
- সকল দল, মত ও লিঙ্গের মানুষের সমান শরিকানা নিশ্চিত করতে হবে।
- জুলাই সনদ সহজ ও সাবলীল ভাষায় উপস্থাপন করতে হবে যাতে সাধারণ মানুষ তা বুঝতে পারে।
- চূড়ান্ত করার আগে জনগণের মতামতের জন্য জুলাই সনদকে অনলাইনে প্রকাশ করতে হবে।
এ সময় উপস্থিত নেতারা সরকারের প্রতি আহ্বান জানান, জনগণের সঙ্গে সংঘাতে না গিয়ে তাদের ন্যায্য দাবি মেনে নিয়ে দেশে একটি গণতান্ত্রিক পরিবেশ নিশ্চিত করা হোক।
উল্লেখ্য, জুলাই মাসে দেশের বিভিন্ন স্থানে সরকারবিরোধী বিক্ষোভে রক্তক্ষয়ী ঘটনার পর এই দাবিগুলো আরও জোরালোভাবে সামনে এসেছে।
Times of Bangladesh-এর জন্য রিপোর্ট: নিউজ ডেস্ক