চট্টগ্রাম বন্দরে যেন নতুন সময়ের সূচনা হয়েছে। ৭ জুলাই ২০২৫ থেকে এনসিটি (নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল) টার্মিনালের দায়িত্ব গ্রহণ করে চট্টগ্রাম ড্রাইডক লিমিটেড। দায়িত্ব নেয়ার মাত্র সাত দিনের মাথায় প্রতিষ্ঠানটি প্রমাণ করেছে—সৎ উদ্যোগ, সুশৃঙ্খল ব্যবস্থাপনা ও দক্ষ নেতৃত্ব থাকলে বদল আসতে সময় লাগে না।
বন্দরের প্রতিদিনের গড় কন্টেইনার হ্যান্ডলিং ২২৫ টিইইউএস (Twenty-foot Equivalent Units) বেড়ে গেছে। দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির এই স্পন্দন যেন পুরো জাতির আত্মবিশ্বাস আরও কয়েক ধাপ বাড়িয়ে দিয়েছে।
অতীত বনাম বর্তমান: পরিসংখ্যানই বলছে গল্প
- ০১ জুলাই থেকে ০৬ জুলাই ২০২৫: সাইফ পাওয়ারটেক লিমিটেড পরিচালিত এনসিটি টার্মিনালে প্রতিদিন গড়ে ২,৯৫৬ টিইইউএস কন্টেইনার হ্যান্ডলিং হয়।
- ০৭ জুলাই থেকে ১৩ জুলাই ২০২৫: চট্টগ্রাম ড্রাইডক লিমিটেডের অধীনে কন্টেইনার হ্যান্ডলিং বেড়ে দাঁড়ায় ৩,১৮১ টিইইউএস-এ।
মাত্র এক সপ্তাহে গড় পার্থক্য ২২৫ টিইইউএস, যা শতকরা হিসেবে প্রায় ৭.৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধি।
কেন এত দ্রুত উন্নয়ন?
- পরিকল্পিত জাহাজ অপারেশন
- প্রযুক্তিনির্ভর ব্যবস্থাপনা
- প্রশিক্ষিত জনবল
- নতুন নেতৃত্ব ও মনিটরিং
অর্থনীতিতে ইতিবাচক বার্তা
বাংলাদেশের বৈদেশিক বাণিজ্যের প্রাণকেন্দ্র চট্টগ্রাম বন্দর। কন্টেইনার হ্যান্ডলিংয়ে এই অগ্রগতি সরাসরি দেশের আমদানি-রপ্তানি খাতে গতি আনবে। সময় বাঁচবে, খরচ কমবে, ব্যবসায়ীরা লাভবান হবেন। এক্ষেত্রে ড্রাইডকের এই শুরু দেশীয় অর্থনীতির জন্য একটি ভালো বার্তা বয়ে এনেছে।
প্রধান উপদেষ্টার প্রতিক্রিয়া
"ড্রাইডক দায়িত্ব গ্রহণের পর চট্টগ্রাম বন্দরে কন্টেইনার হ্যান্ডলিংয়ে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি দেশের অগ্রযাত্রার প্রতীক।"
এই পোস্ট দ্রুত ভাইরাল হয় এবং ব্যবসায়ী মহল ও সাধারণ নাগরিকদের পক্ষ থেকে ব্যাপক সাড়া পড়ে।
ভবিষ্যতের দৃষ্টিভঙ্গি
বর্তমানে এনসিটি’র চারটি জেটিতে একযোগে চারটি জাহাজে অপারেশন পরিচালনা করছে চট্টগ্রাম ড্রাইডক লিমিটেড। ভবিষ্যতে যদি এই ধারা অব্যাহত থাকে, তাহলে এটি হবে চট্টগ্রাম বন্দরের ইতিহাসে একটি মাইলফলক পরিবর্তন।
সরকারের নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ও ড্রাইডকের কার্যক্রমের ওপর সন্তুষ্ট। সূত্রমতে, অন্যান্য টার্মিনাল পরিচালনার ক্ষেত্রেও এমন দক্ষ প্রতিষ্ঠানকে অগ্রাধিকার দেয়ার চিন্তাভাবনা চলছে।
উপসংহার
চট্টগ্রাম ড্রাইডক লিমিটেডের এই অভাবনীয় সাফল্য শুধু একটি প্রতিষ্ঠানের গল্প নয়, এটি বাংলাদেশের সম্ভাবনার গল্প। এটি প্রমাণ করে যে সঠিক দিকনির্দেশনা ও পারদর্শী ব্যবস্থাপনায় যে কোনো প্রতিষ্ঠান দেশের উন্নয়নে বড় অবদান রাখতে পারে। এ যেন এক নতুন ভোরের শুরু।