বাংলাদেশে ‘জুলাই’—যা গণতন্ত্র ও স্বাধীনতাকে নতুন দৃষ্টিতে চিহ্নিত করেছে—সেই দিনের স্মৃতিকে কেন্দ্র করে একটি শক্তিশালী ও আবেগঘন বার্তা দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। মঙ্গলবার, তার ভেরিফায়ড ফেসবুক পেজ থেকে এক প্রতিশ্রুতিশীল পোস্টে তিনি বলেন, “জুলাই আমাদের মাথা তুলে দাঁড়ানোর শিক্ষা দিয়েছে।” তিনি আরও উল্লেখ করেন, “জুলাই আমাদের দুঃসাহসের নয়, বরং স্থায়ী সাহসের জিন দিয়েছে।”
প্রেস সচিব বলেন, প্রায় দশ মাস ধরে তারা অপেক্ষা করেছিল—যে সময়ে আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা শহীদদের সম্মান না দিয়ে তাঁদের অধিকার ও সংগ্রামকে তুচ্ছ করে, ১৭ কোটি মানুষকে ‘জঙ্গি’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে। “আপনাদের ঔপনিবেশিক প্রভুরা আবারো দেশ দেবে”—এই বিকৃত আশা নিয়ে এই সব মন্তব্যগুলো এসেছে।
তিনি স্পষ্ট জানালেন যে, “জুলাই আমাদের ভুলতে দেয় না তাদের—যাদের চোখ ছিঁড়ে নেওয়া হয়েছে, আত্মা ছিন্নভিন্ন হয়েছে।” শান্তি, ক্ষমতাসীনদের দুঃখ প্রকাশের মাধ্যমে না পাওয়া যায়, এমন দৃঢ়তার কথাও তুলে ধরেন। যারা শহীদদের ব্যঙ্গ করেছে, তাদের মুখোশ খুলে ফেলাই হবে তাদের “গণহত্যার সহযোগী, মানবাধিকারের ডাকাত” বলে অভিহিত করা।
শফিকুল আলম আরও বলেন, তারা যেখানে এগিয়ে যাবে—মাটি, নদী, পাহাড় ও ভার্চুয়াল ‘জগতে’—সেখানে লড়াই হবে অবিরত, যতক্ষণ না আওয়ামী লীগের কাছে ‘ক্ষমা’ দাবি দ্বারা সত্য উদ্যানায়ন করা হয়। তিনি বলেন, “আপনাদের শান্তি কখনোই হবে না—যতক্ষণ না শহীদ ও আহতদের সম্মান দেখানো হবে, আপনারা ‘আমি দুঃখিত’ বলবেন।”
‘জুলাই’ সময়ের স্মৃতি, শহীদ ও আন্দোলনের মর্মস্পর্শী ঘটনাগুলো শুধু ইতিহাস নয়, বর্তমান ও ভবিষ্যতের সংগ্রামের প্রেরণা; শফিকুল আলমের এই কণ্ঠস্বর তা নিশ্চিত করছে। জনগণের দুঃখ, যন্ত্রণায় পূর্ণ স্মৃতির প্রতি সম্মান দেখানো এবং এর ন্যায়সঙ্গত মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠা―এই মূল্যবোধ এই ঘোষণায় স্পষ্টভাবে ফুটে উঠেছে।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের জুলাইয়ে সংগঠিত গণ-উৎসবের ঘটনাবলি—যা ‘জুলাই বিপ্লব’ বা ‘জুলাই গণআন্দোলন’ নামে পরিচিত—গণতন্ত্র পুনঃস্থাপন এবং নির্যাতনের বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতার ঐতিহাসিক উত্তেজনার বহিঃপ্রকাশ। সেই আন্দোলনে ৮৩৪ জন শহীদের তালিকা সরকারি গেজেটে প্রকাশ পেয়েছে, যাদের বিনিময়ে বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রতিরূপ বদলে গেছে ।