আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
মধ্যপ্রাচ্যে নতুন করে শুরু হয়েছে এক ভয়ঙ্কর উত্তেজনা। ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীরা দাবি করেছে, তারা ইসরায়েলের বেন গুরিওন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের দিকে একটি হাইপারসনিক ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে। এই হামলাকে ইসরায়েলের গাজা যুদ্ধ ও সাম্প্রতিক আগ্রাসনের বিরুদ্ধে জবাব হিসেবে উল্লেখ করেছে হুথিরা।
হুথি বাহিনীর সামরিক মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইয়াহিয়া সারি বলেন, “আমরা প্রথমবারের মতো হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করেছি এবং তা নির্দিষ্ট লক্ষ্যে সাফল্যের সঙ্গে আঘাত হেনেছে।”
অন্যদিকে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (IDF) দাবি করেছে, তারা ক্ষেপণাস্ত্রটি মাঝপথেই প্রতিহত করতে সক্ষম হয়েছে। তবে আন্তর্জাতিক একাধিক গণমাধ্যম জানিয়েছে, এই ঘটনার জেরে কিছু সময়ের জন্য বেন গুরিওন বিমানবন্দরের কার্যক্রমে বিঘ্ন ঘটে।
ইসরায়েলের পাল্টা প্রতিক্রিয়া
ঘটনার পরপরই ইসরায়েল ইয়েমেনের হুদায়দা, রাস ইসা, সালিফসহ একাধিক বন্দর ও অবকাঠামোতে বিমান হামলা চালায়। এই অভিযানের নাম দেয়া হয় "Operation Black Flag"। এতে বন্দর, বিদ্যুৎকেন্দ্র এবং স্টোরেজ ইউনিট ক্ষতিগ্রস্ত হয়। হুথিরা জানায়, এসব হামলার লক্ষ্যবস্তু ছিল বেসামরিক অবকাঠামো।
হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র: প্রযুক্তির এক ধাক্কা
হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র শব্দের চেয়েও পাঁচগুণ বেশি গতিতে চলতে পারে (Mach 5+)। এই প্রযুক্তি বর্তমান বিশ্বে খুবই সীমিত পরিসরে ব্যবহৃত হচ্ছে, এবং তা প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার জন্য অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং। যদি হুথিদের এই দাবির সত্যতা মেলে, তাহলে এটি তাদের সামরিক সক্ষমতার এক গুরুত্বপূর্ণ মোড়।
ভূরাজনৈতিক প্রভাব ও বিশ্লেষণ
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই হামলার মাধ্যমে হুথিরা শুধু ইসরায়েল নয়, বরং পুরো অঞ্চলকেই বার্তা দিতে চাচ্ছে। ইরান, হিজবুল্লাহ, হামাস ও হুথি বাহিনীকে নিয়ে গঠিত তথাকথিত “Axis of Resistance” দিন দিন আরও সক্রিয় হয়ে উঠছে।
এই ধরনের প্রযুক্তি ব্যবহার এবং এর পাল্টা প্রতিক্রিয়া মধ্যপ্রাচ্যের স্থিতিশীলতার জন্য মারাত্মক হুমকি হয়ে উঠতে পারে। রেড সি অঞ্চল ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্যপথও এতে বিপন্ন হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
উপসংহার
হুথিদের দাবি যদি সত্যি হয়, তাহলে এটি মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধের এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা। তবে এই মুহূর্তে যতটুকু নিশ্চিত হওয়া গেছে, তা হল—পরিস্থিতি খুব দ্রুত বদলাচ্ছে এবং এর প্রভাব বিশ্ব রাজনীতিতেও পড়তে পারে।
বর্তমান পরিস্থিতিতে সংযম ও কূটনৈতিক উদ্যোগই হতে পারে স্থায়ী সমাধানের পথ।
তথ্যসূত্র: ইত্তেফাক, যুগান্তর, বাংলানিউজ২৪, আনাদোলু এজেন্সি, টাইমস অব ইন্ডিয়া, পলিটিকো, চায়না ডেইলি